ঢাকা: ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট সাকিব আল হাসান খেলতে চান দেশের মাটিতে। আগামী মাসে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসবে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে হত্যা মামলা মাথায় নিয়ে দেশে ফেরা ও পরে যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে যাওয়ার ব্যাপারে শঙ্কিত সাকিব। বিসিবির কাছে তিনি চেয়েছেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা। তবে বোর্ড প্রধান ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, কারও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার সামর্থ্য তাদের নেই।
বৃহস্পতিবার বোর্ড সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ফারুক বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আসতে হবে সাকিবের নিরাপত্তার বিষয়টি, “আমি তো আসলে কোনো এজেন্সি না। পুলিশ বা র্যাব এরকম কিছু না। এটা আসলে আমার হাতে না। সরকার পর্যায় থেকে আসতে হবে নিরাপত্তার ব্যাপারটা। নিরাপত্তার ব্যাপারটা দুই রকম। একটা হচ্ছে আইনি, আরেকটা দর্শকের বিষয়। এটা সাকিবকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা এটার অংশ হতে পারব না। এই মুহূর্তে বলতে পারব না কোর্ট থেকে কী... আর ব্যক্তিগত কোনো মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার সামর্থ্য নেই।”
ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টের আগের দিন বাংলাদেশের ইতিহাসের সফলতম ক্রিকেটার সাকিব অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। গত জুনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই নিজের শেষ টি-টোয়েন্টি খেলার কথা উল্লেখ করেছেন। তবে ওয়ানডে খেলতে চান আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত।
পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব বেশ কোণঠাসা অবস্থায় আছেন। একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে তাকে। এছাড়া, শেয়ার বাজারে কারসাজির অভিযোগে তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। তাই দেশে ফেরা ও পরবর্তীতে নির্বিঘ্নে দেশের বাইরে যাওয়ার নিশ্চয়তা চেয়েছেন তিনি। তা না হলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তার খেলার সম্ভাবনা ভীষণ ক্ষীণ বললেই চলে। সেক্ষেত্রে কানপুর টেস্টই হবে সাকিবের শেষ টেস্ট।
বিসিবি সভাপতিও চান, সাকিব তার শেষ টেস্ট দেশের মাঠে খেলুন। কিন্তু তাকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা তারা নিতে পারবেন না, “টেস্টের ব্যাপারে সে বলেছে, ঢাকা থেকে বিদায় নিতে চায়। আমরা সম্মান জানিয়েছি। সে জানতে চেয়েছে, মামলার ব্যাপারে তার কী হবে। আমি বলেছি, এটা আমাদের হাতে নেই। বোর্ড হিসেবে আমাদের তেমন কিছু করার নেই। তবে ওর মতো আমিও বিশ্বাস করি, এখানে শেষ টেস্ট খেলতে পারলে এর চেয়ে ভালো কিছু হয় না। বাকিটা ওর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ছাড়পত্রটা কে দেবে? আমাদের বোর্ড থেকে ছাড়পত্র দিতে পারব না। এটা উচ্চ পর্যায় থেকে আসতে হবে।”
সাকিবকে নির্বিঘ্নে দেশত্যাগের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি যোগ করেন, “এতদূর ক্ষমতা আমার মনে হয় বোর্ডের নেই।”
এর আগে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণার সময় কানপুরে সাকিব জানান, “এটা আমার ইচ্ছা (মিরপুরে খেলে বিদায় নেওয়া)। আমি বিসিবিকে জানিয়েছি। তারাও একমত হয়েছেন। তারা যদি আমাকে নিরাপদে মিরপুরে খেলার সুযোগ দেন ও দেশ থেকে বাইরে যাওয়ার পরিস্থিতি করে দেন, তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট পর্যন্ত খেলতে চাই।”
সবশেষ সংসদ নির্বাচনের আগে সাকিব আওয়ামী লীগের যোগ দেন। এরপর তিনি ডামি সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন এবং আওয়ামী লীগের এমপি হন। ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে দিল্লি চলে যান আওয়ামী লীগের সকল সাবেক এমপি এবং দলের নেতারা গ্রেফতার হচ্ছেন অথবা পালিয়ে বেড়াচ্ছে বেড়াচ্ছেন অনেকের নামেই হত্যা মামলা হয়েছে ধরে নেওয়া হয় ,সাকিব যেহেতু দামি নির্বাচনের এমপি তার উপর সাধারণ মানুষের খুব থাকতেই পারে।
“সাকিব একজন রাজনীতিবিদি, সবাই জানেন, সবকিছু মিলিয়ে সে হয়তো নিরাপদ বোধ করছে না। এটা নিয়ে আমার মন্তব্য করা ঠিক হবে না,” এক প্রশ্নের জবাবে বলেন ফারুক আহমেদ।